Bookmaker Bet365.com Bonus The best odds.

Full premium theme for CMS

আমাদের সেই ওয়াহিদ ভাই

Блогът Web EKM Blog очаквайте скоро..

ওয়াহিদ ভাই বাংলাদেশে প্রায় কিংবদন্তী হয়ে উঠেছেন অনেকদিন ধরেই। নাগরিক শিক্ষিত সংস্কৃতির নানা মাধ্যম-পেশার সমাজে এই ঘটনা ঘটেছে। কেবল ঢাকাই নয়। জেলা শহরে শহরেও কয়েক হাজার মানুষ তাঁর সঙ্গে নানা সময়ে যুক্ত হয়েছিলেন, যুক্ত আছেন। এবং সেটা ছিল সকলের কাছেই প্রায় অন্যরকম এক ব্যক্তিগত সম্পর্ক। এমন গুরুত্ব আর মূল্য-মর্যাদা দিয়ে ভালোবাসার সম্পর্ক তাদের আর কারো সঙ্গেই নাকি হয় নি, হয় না। নাগরিক সমাজে যা ঠিক কারো সঙ্গে কারো কখনো হয় না। গ্রামের হারিয়ে যাওয়া সমাজে সবার সঙ্গে সবার একটা সহজ সম্পর্কের কথা আমরা শুনি। শহরে তো একজন কেউ যত হতে থাকে গুণী-মানী, তত সে সকলের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যায়- ব্যক্তিগত নিকটজনের কাছ থেকেও। গুণ-মানের সঙ্গে ক্ষমতার একটা অঙ্গাঙ্গী সম্পর্ক বুঝি থাকে। গুণীমানীকে চিরদিনই ক্ষমতা তার কাজে লাগায়। ক্ষমতার কত যে রূপের লীলানাট্য ঘটে চলে প্রতিক্ষণই- ব্যক্তিগত, পারিবারিক বা দেশ-সমাজের যেকোনো সম্পর্ক তাই হয়ে ওঠে এক ক্ষমতা-সম্পর্কই। একেক ক্ষমতা-কাঠামোতে তার একেক ধরণ-ধারণ। ওয়াহিদ ভাই কি প্রবল এই কর্তৃত্ব-বিন্যাস ভাঙতে চেয়েছেন প্রাণপণে, অদম্য এক জঙ্গী রোখে? সব কাজেই তো দেখি তার কীরকম এক অসম্ভব, অবাস্তব মরিয়া জেদ যেন। তাঁর স্বপ্ন কল্পনা, আকাক্সক্ষার রুচি-নীতি-আদর্শ এমন এক উচ্চ তারে বাঁধা ছিল- এক-কথায় আমরা যাকে ইউটোপিয়া বলে আরাম পাই, অথচ এমন ভাবতে পারাতেই না মনের এক বিরাট জয়।

অল্পে সুখ নাই- সমগ্র এক ভূমার সাধনার কথা উপনিষদ-কাল থেকেই শোনা যায়- তার সার কথা হলো: যা দিয়ে আমি অমৃত না পাবো, অমৃত না হবো তা দিয়ে আর কী হবে আমার! এটা হয়তো প্রাচ্যদেশীয় চির এক অন্বিষ্টকল্পন। অধরাকেই ধরবার কঠিন এক ব্রতযাত্রাই সম্পন্ন করেছেন চিরকাল তাই কত শত সাধক বাউল ভাবুক কবি শিল্পী সুজন। এই সাধনা তো প্রায়শ একান্ত এক নির্জন সাধন, কখনো হয়তো ছোট নিজস্ব সমাজের মধ্যে হতো অথচ ওয়াহিদ ভাই কেবলি দেশ জুড়ে নানা সাংগঠনিক কর্মসূচির আয়োজন করে গেছেন। কেবল রাজনীতি বা কেবল শিল্প-সংস্কৃতিতে একমুখী হয়ে নয়। গণনাট্য সংস্কৃতির সরল পথেও নয় বরং বেশ কঠিন পথেই নাগরিক জটিল বিচ্ছিন্ন মনের গভীরে পৌঁছনোর কঠিন সহজ যাত্রা- রবীন্দ্রগানে গানে কথাসুরের সূক্ষ্মতর তূণে সত্তার জাগরণ, বোধন। জাতীয় এক মানস উদঘাটন কেবল গণসঙ্গীতের ওপর-স্তর আপাত প্রতিবাদের মধ্যবিত্তপনায় ঘটে না; গণনাট্য সংঘের সেই মহা-উত্থান মিইয়ে যেতে তাই সময় লাগে নি। তার জন্য চাই ভাষা-সুরের এমন জনমানস-ভিত্তি যেন তা সমাজে, মানুষের মনে ক্রিয়া করে, আবেগ জাগে- সেই সঙ্গে যুক্তিবুদ্ধি কাণ্ডজ্ঞান ফিরে আসে তারই জন্যে যত যা-কিছু আচার অনুষ্ঠান করেছেন। এই কাজে রবীন্দ্রনাথের গান তাঁর কাছে সবচেয়ে বড় অবলম্বন মনে হয়েছে। চিরকাল গানে গানেই তো বাঙালির মন প্রাণ হিয়ায় জোয়ার জেগেছে। কীর্তনে জারিগানে বাউলের সুরেই বাংলা ভাব-দর্শন চিন্তার বোধবুদ্ধি অনুভব অপূর্ব এক রসায়নে মিলেছে। কথায় সুরে নৃত্যে বাংলা ভাবের একান্ত মর্মভাষা, তার নিজস্ব বাচন রূপ পেয়েছে। অথচ উপনিবেশ তো একান্ত নিজস্ব এই ভাষাটিই ভাঙতে চেয়েছে- সমাজ সংস্কৃতি ভেঙে চুরে জাতির মানসভাষা, তার ভাব আধার থেকে তাকে কেবলি বিচ্যুত করে করে। তারই পরিণতি দেখি উপনিবেশকালীন ও উপনিবেশউত্তর নাগরিক শিক্ষিত সংস্কৃতির সমাজে। রবীন্দ্রনাথ প্রাণপণে বাঙালির একান্ত প্রাচ্যদেশীয় এই ভাব ও ভাষার মৌলভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েই ইয়োরোপীয়, বিশ্বের যা কিছু নেবার নিয়েছেন। নাগরিক বাংলা গানের এক নিজস্ব বাচন এভাবে তৈরি হয়েছে- দ্বিজেন্দ্রলাল, অতুলপ্রসাদ, নজরুল আর রজনীকান্তের বিচিত্রনির্মাণ ধারায়। আমরা তো জানি, রবীন্দ্রনাথ আর যত বাংলা গানে গানে পাকিস্তান-পর্বে বাঙালির জাতীয় মানস জাগরণ ঘটেছিল। সামাজিক, রাজনৈতিক উত্থান, অভ্যুত্থান তাইতে ঘটেছিল। পহেলা বৈশাখে রমনায় প্রভাতী গানের আসর, রবীন্দ্র শতবার্ষিকীর নানা আয়োজন, ঋতু বরণ-উৎসব কিংবা রবীন্দ্রসঙ্গীত নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে গানের মুক্তধারা খুলে দেওয়া- ছায়ানটের এরকম যত কাজ তার মুখ্য পরিকল্পক আয়োজক ছিলেন ওয়াহিদ ভাই। এদেশের আদি চলচ্চিত্র সংসদ গঠনেও তার প্রণোদনা সর্বাধিক। ষাটের দশকের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের প্রধান এক কাণ্ডারী ছিলেন যেন তিনি। মুক্তযুদ্ধকালীন ‘স্বাধীন বাংলা শিল্পী সমিতি’ গঠনেও তাঁর ছিল মুখ্য ভূমিকা। স্বাধীনতার পরে রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ- এর বার্ষিক আয়োজন, ভাষা শিক্ষা-চর্চা প্রতিষ্ঠান ‘কণ্ঠশীলন’- তাঁর প্রধান কর্মক্ষেত্র হয়ে ওঠে। যদিও বাংলাদেশ-পর্বে অবশ্য নানা জটিল প্রতিক্রিয়ায় শিল্পের সংস্কৃতির সেই সামাজিক ক্রিয়া অনায়ত্ত হয়। ওয়াহিদ ভাই শেষ বছর-কয়েক কেবল জনমানসের নিজস্ব ভাব ও সুরের দিকে মন ফিরিয়েছিলেন- ছায়ানট ভবন উদ্বোধনে ঘোষণাও করেন- এই হবে তাদের নব অভিযান। তার জন্য বছর কয়েক বাঁচতে চেয়েছিলেন তিনি।

তবে বিচিত্র বিষয়ে অবিরাম লেখালেখিতে দেশ-সমাজ-রাষ্ট্রের ক্ষমতা-কর্তৃত্বের ক্রম বর্বরায়নের বিরুদ্ধতা করে গেছেন আমৃত্যু। আর সুযোগ পেলেই সভাসমিতি অনুষ্ঠানে বলে গেছেন এমন এক অমৃত-কথন - শ্রুতিনির্ভর সংস্কৃতির মানুষের, কানে মনে, মননে ফল্গুধারায় রাজনৈতিক নান্দনিক কঠিন-কোমলে অমিয় সঞ্চার করেছে। মধুর আমার বাংলা ভাষা নাগরিক এই সমাজেও বাক্সময় বিভূতি অর্জেছে। বাঙালির হৃদয়-মন-ধন যে তার এই অমৃত-বুলি তার আস্বাদ ফিরে পেয়েছে শহরের জনমানুষ। চিরকাল সে ভাষা ছিল যে মধুর কবিতা, মধুর গান। কথায় ঝরতো মধু তাই তো একদা। আসরে আসরে ভাবের রস উথলে উছলে উপচে পড়তো- নাম না জানা কতশত গায়েন, কথকের বয়ানে - ওরে ও চিকন কালার রূপ বর্ণনা বা রাইয়ের বিরহে কাতরিয়া।

সবার ওপরে তার হৃদ্সম্পর্কের রসময় এক প্রবর্তনায় যখন যাকে যতটা পেয়েছেন উথলে উঠেছেন। নানা বয়েসী নারী-পুরুষের সমানবয়েসী এক সখ্যে মিতালি পাতানোর প্রণয়াভিসারে বুঁদ হয়ে তাঁর যেন ঘোর লাগতো রঞ্জিত হয়ে আর রঞ্জিত করে কতজনে! অর্ধনারীশ্বর প্রায় বৈষ্ণব এক মেজাজ তাতে। পরস্পরকে উচ্চ বলিয়া জ্ঞান করার বাউল-সুলভ কৃত্যে বুঝিবা। আর তাইতে যেন তাঁর সঙ্গে সম্পর্কীয় সকলেরই মনে হতে চায়: তার সঙ্গেই বুঝি তাঁর বিশেষ এক প্রাণের যোগ। রাবীন্দ্রিক এক নাগরিক ঠাকুরদাদা যেন তিনি- বাঙালির সে যে এক আর্কিটাইপ চরিত্র। শহরে বহুজনের সঙ্গে চলেছে তাঁর এমন সম্পর্ক-পাতন। আর এখানেই ঘটতে থাকে বিপত্তি। সকলেরই তাতে  তো এই প্রথম ঘটে আত্মপরিচয়- বড় করে নিজেকে পাওয়া অনুভব করা আর এহেন প্রাপ্তিও অজান্তে জাগিয়ে দিত যে নাগরিক সেই আদি অহং। বিশেষ মূল্য মর্যাদা কেউ পেলেই বুঝি এহেন বিকার ঘটে- আমার মন মতোই যেন হতে হবে তাকে- প্রেমের সম্পর্কেও যেমন হয়। আর সেই সঙ্গে বিচারকের উচ্চ আসনে বসে ফেনিয়ে ওঠে সমালোচনধারা: সকলের মন মতো মত মতো কেন তিনি নন! প্রায় যেন ব্যক্তিগত সম্পর্কের সম্পত্তিজ্ঞানের অহংকারে ঈর্ষার বাণ ডাকতো। এটা কেবল মেয়েদের মধ্যে নয়, ছেলেদেরও প্রায় একই রকম হতো। তাতে অনেকে মিলে সাংগঠনিক কাজেও ঘটতো বিপত্তি। সংগঠন তো বহু স্তর ক্ষমতা-সম্পর্কে বিন্যস্ত থাকে, তার সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের এই সন্নিপাতে সব আরো জটিল হয়ে উঠতো। তাইতে দেখা যেত তাঁর সঙ্গে দীর্ঘ সম্পর্ক থাকতো তাদেরই কেবল যারা প্রয়োজনের স্বার্থেই তাঁকে কাজে লাগাতে চাইতো কেবল- সম্পর্কের সেই মানবিক বন্ধনটি আর তত যেন থাকতো না।

তবু সবার মনেরই ভেতরে কোথাও যেন রয়ে যেত তাঁর জন্য ভিন্ন এক আসন। তিনি যেন এক মনেরই মানুষ। কেন তিনি নন তবু সবটুকুই মনের মতোন। প্রাণে যে তেমন করেই আকুল করতেন তিনি যে হবেন আমার যথেচ্ছা-পূরণ। নারীসুলভ ব্যাকুল এক অভিমান নাকি বিষাদবেদন ছেঁয়ে থাকতো কতজনের মনের কোণে তাই। পুরুষসুলভ রাগ দুঃখ ক্ষোভ ক্রোধও ফুঁসে উঠতো একই সঙ্গে। একেক পরিবারের সবার সঙ্গেই হত যে তাঁর নানা সম্পর্ক। কিশোর তরুণ-তরণী দিয়ে শুরু যার। নাগরিক সমাজ স্বভাবত সম্পর্ক বিরোধী, সম্পর্কহীনতা তার মৌল স্বরূপ যেনবা। আজকের বাজার-বিশ্বে তো কথাই নেই। সেখানে ওয়াহিদ ভাই পত্তন করে ফেলতেন যেন হারামণি কবেকার সেই এক আস্ত গ্রামসমাজই। নানা বয়সের ছেলে-মেয়ে বুড়োগুড়ো নিয়ে দল বেঁধে একেক শহরের বাসায় বাড়িতে ঢুকে পড়া- গান গল্প হাসিখুশির আড্ডায় মজে, তারপর আরেক বেলা আর এক ঘরে পাড়ায় হামলা করা - এ বাড়ির মানুষজন জুটে ভারি করেছে তখন দলবল। সবার মনে জাগাতেন বিভোর এক মিলনমেলা, সহজ মানব সম্পর্কের কত যে লেনাদেনা! যদিও নাগরিক শিক্ষা চর্চা সংস্কৃতির যত অনুষ্ঠান প্রতিযোগিতায় কী করে আর টেকে বেশিদিন অমন আহলাদ-ঘোর। কাজের বাস্তবে যে কত কলাকৌশল ছল চাতুরি লাগে- নইলে তো এই দেশ-সমাজে কিছু করাও বুঝি যায় না। নানা স্বার্থ লাভালোভের ক্ষমতা-সম্পর্কের মধ্যে থেকে কতদিন আর কতটুকু জিয়ানো যায় সম্পর্কের অমন অমল মহিমা। গানে গানেও বন্ধন তাই ঘোচে না যেন কিছুতেই। তা ছাড়া নারী-পুরুষ পরস্পরের প্রতি যে অসহজ অবদমন অস্বাভাবী বিকৃত করে ছাড়ে আমাদের। আর ওয়াহিদ ভাই ছিলেন এই প্রতিবন্ধতার জানি দুষমন- তাইতে আমাদের মনের যত চাপা-পড়া বিকার ফেনায়ে উঠতো- নিন্দা-কুৎসার বাণ ডাকতো। তাতেও তাঁর আহলাদ-ঘোর কিছুমাত্র কাটতো না। বেশিদিন ধরে বেশিজনে সইতে বইতে পারে না তাই অভিনব সে মৈত্রীর দায়। হারজিৎ-আর পারা-না-পারার নিরন্তর এই টানাপোড়েন। তার ওপর আছে খ্যাতি প্রতিষ্ঠা, ক্ষমতার পাগলপারা নেশা চলতেই থাকে সবার মনের তলে। ক্ষমতা আর মমতার বিপরীত কঠিন এক টানাপোড়েন। আর তাইতে সরে সরে যায় সম্পর্কিত একেজন। তবু যাওয়া কি আর যাওয়া কেবল! আসা যাওয়া চলতেই থাকে যে।

কী একটা তবু থেকেও যে যায় সবার মনের কোন সে তলে। তাঁর শেষ দিনকয়েকে বারডেমে, ছায়ানটে, শহীদমিনারে যাদের দেখেছি- তাদের চোখে মুখে লুকানো গেছে কি মনের সেই সকল ক্ষণিক যত আকুলতা। চতুর নাগরিক মুখোশ কখন যে খুলেও গেছে দেখি। মহাগুণি কেউ হলেই তো আর এমন ঠিক হয় না। তার জন্য অন্য কিছু একটা লাগে।

আর তা হোল মানুষের আদি এই স্বভাবমাহাত্ম-‘মানুষের মন চায় মানুষের মন’।- এই কান্না কোনোদিনও বুঝি ঘুচিবে না মানুষের- যেন তা না ঘোচে।

ভালোবাসা, সম্পর্ক করা- মিতা সখা হওয়া, সই পাতিয়ে ফেরা- এই ছিল বুঝি ওয়াহিদ ভাইয়ের শিল্পসংস্কৃতি কর্মের, তার রাজনীতি নন্দনের মুখ্য করণক্রিয়া- ব্যক্তির হয়ে ওঠার মৌল প্রয়োগকৃত্য। নাগরিক সমাজ যে মূলত সম্পর্কহীনতার এক বাজার-সমাজ। সেই বাস্তবতায় রাজনীতি কি শিল্পসংস্কৃতির তাবৎ ক্রিয়াই হয়ে ওঠে এক বহির্ক্রিয়া, তাতে যে মানব মনের কোনো সাড় জাগে না শেষ পর্যন্ত। সম্পর্ক বিনা তা হবে কী করে- সামাজিক ক্রিয়ার মুক্তধারা তাইতো কিছুতেই স্থায়ী বিকাশ-গতি পায় না। অনুষ্ঠান, চর্চা-শিক্ষা, সংগঠন-সূত্রে যত মানুষের সাথে যুক্ত হয়েছেন- প্রাণপাত করেছেন সত্যকার এক সমাজ-মানব সম্পর্কপাতের- ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তুলে সকলের সঙ্গে সকলের এক সম্বন্ধন রচনা করে ফেরা। বয়স-শ্রেণী আর নারী-পুরুষ নির্বিশেষে- ‘চাই বয়সানুসারে আর সম্বন্ধ যাথার্থ্য/ সমতাই’- বিষ্ণু দের এই অন্বিষ্টভাষ বাস্তবে, জীবনে ঘটিয়ে তুলেছেন। তার সঙ্গে সম্পর্কিক প্রতিজনের হয় এক সাধারণ অভিজ্ঞতা- এতটা মূল্য আর গুরুত্ব আর কারো কাছেই পাওয়া যায় নি। সবাই ফিরে পেত যেন সকলের এক বড়-আমি, গভীর সত্তা-স্বরূপ। এর থেকে বড় আর কী থাকে পাওয়ার! শিল্প-সংস্কৃতির ক্রিয়ায় মানুষ যে ক্রমে হয়ে ওঠে যা-কিছু তার হবার আছে- এই হওয়াটাই তাই মানবের আদি মৌল সৃজন অভিপ্রায়, অন্বিষ্ট।

একা একা কোনো ক্রিয়া হয় না- মানবক্রিয়া হয় না সম্পর্ক বিহনে- তা নইলে যে সকল পণ্ড- শিল্প-সংস্কৃতি সমাজ রাজনীতি- যাই বলি না কেন।

বিপ্লব বালা : নাট্যজন, শিক্ষক ও সমালোচক