Bookmaker Bet365.com Bonus The best odds.

Full premium theme for CMS

মাইকেল মধুসূদন দত্তের প্রহসনে সমকালীন সমাজ বাস্তবতার বিবর্তন ও দ্বন্দ্বের স্বরূপ অনুসন্ধান

Written by সালমা সুলতানা.

Блогът Web EKM Blog очаквайте скоро..

সৃজনের তীব্র বর্ণচ্ছটায় ঔপনিবেশকালের বাংলাসাহিত্যের নব্য কালমুখ আবিষ্কারের স্রোতে মধুসূদনের আবির্ভাব। তাঁর কবিতা, গদ্য, নাটক এবং প্রহসনে সমকালের জীবনচিত্রের অনুষঙ্গে সমাজের অন্তদেহের চিরকালীন দ্বন্দ্ব মূর্ত। যার সঙ্গে যুক্ত অর্থনৈতিক সম্পর্ক নির্ভর সামাজিক পরিবর্তন। রচনার এ ধারা অকস্মাৎ উদ্ভূত নয় বরং শিল্পের ক্রমচলমানতায় একে অস্বীকার করে চর্চিত শিল্পচর্চা কালের অতলে বিলীয়মানরূপে দৃষ্ট। ইতিহাসের জমিন খুঁড়ে দেখা যায়, সামাজিক গঠনকাঠামো আর শিল্পের আঙ্গিক ও বিষয় পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। শিল্পরীতি বিচারে গ্রীক মহাকাব্যের গঠনরীতি বিংশ শতকের শিল্পের গঠনকাঠামো নয়। তবে আঙ্গিকের সাযুজ্যকে অস্বীকার করা যাবে না। কালের ঘোড়ায় চড়ে এর পরিবর্তন হলেও সম্পূর্ন বদলে যায় না। যে কারণে ব্রেখটের নাটকের গঠনকৌশলে বর্ননাধর্মীতা বুনেছেন নাট্যকার। যা কিনা প্রাচীন প্রাচ্য ও প্রতীচ্য নাট্য নির্মাণকৌশল। অবশ্য ভূমি, কাল ও সামাজিক গঠনকাঠামোর সঙ্গে নাটকের বিষয় এবং আঙ্গিক সম্পর্কিত।

উনবিংশ শতকের বাংলা প্রহসনসমূহ সমকালীন সামাজিক সংকট নির্ভর প্রচারসর্বস্ব হয়ে যায়। এ প্রহসন রচনার প্রেক্ষাপট সমকালীন সমাজকাঠামো। বিশ্বসংস্কৃতির দিকে চোখ ফেরালে দেখা যায় প্রতীচ্য সংস্কৃতির অমোঘ প্রভাব আধুনিক সমাজভাবনার পিঠে চড়ে চলে। রাষ্ট্রদখল, উপনিবেশ বিস্তার, বাণিজ্য, ভোগবাদী সংস্কৃতির প্রসার ও চর্চা এর মূল উপাদান। বাঙালিও এ ধারার বাইরে থাকেনি। প্রতীচ্য ভাষা, সাহিত্য, রীতিনীতি বাঙালি সমাজ, শিক্ষা, শিল্প, সংস্কৃতি ও ধর্মকে প্রভাবিত করে। দুটি সংস্কৃতির সংযোগে সামাজিক সংকট নতুন পর্যায়ে উপনীত হয়। দুটি সংস্কৃতি থেকেই গ্রহণের কারণে উদ্ভট এক জীবনধারায় অবগাহন করে বাঙালির সমাজজীবন। বিশেষত কলকাতা কেন্দ্রিক জমিদার ও কলেজের ছাত্ররা বৃটিশ সংস্কৃতিতে অভ্যস্থ হয়ে যায়। উন্মূল মানসিকতায় জারিত হয়ে প্রতীচ্য সংস্কৃতিতে অবগাহন আকস্মিক নয়। নতুন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অবস্থাই সমাজের অভ্যন্তরীণ ভাঙ্গনের নিয়ামক। মার্কসীয় দৃষ্টিতে মানুষের চৈতন্যের নির্ধারক সামাজিক অবস্থা। কখনই চৈতন্য সামাজিক অবস্থাকে নির্ধারন করে না। নতুন সামাজিক গঠনকাঠামো দেখা যায় উনবিংশ শতকের বাঙালি সমাজে, যেখানে বদলায় পুরনো কালের রীতিনীতি। উত্তরকালে সামাজিক আন্দোলনের সূচনা হয় রামমোহন বিদ্যাসাগর প্রমুখের নেতৃত্বে। ভারতীয় সংস্কার সতীদাহ, কৌলীন্যপ্রথা, বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ প্রভৃতির বিরুদ্ধে আন্দোলনই তাদের ব্রত হয়ে দাঁড়াল। যার সঙ্গে মধ্যবিত্ত শ্রেনীর যোগ থাকাই স্বাভাবিক। এর পাশাপাশি কিছু কুপ্রথারও প্রচলন ঘটে। এ কুপ্রথার বিরুদ্ধেও সামাজিক গণমত গড়ে উঠে। সমাজসংস্কার আন্দোলন, কুপ্রথাবিরোধী আন্দোলন উভয়ই শিল্পের ঘরে প্রবেশ করে। তৎকালীন কলকাতাকেন্দ্রিক নাট্যচর্চার মূলধারাই হয়ে উঠে সমাজসংস্কারমূলক নাট্যধারা। এ কালের নাটকে বিষয়বস্তু হিসেবে বিধবাবিবাহ কৌলীন্যপ্রথা, বহুবিবাহ, বাল্যবিবাহ ভ্রষ্টাচারই প্রাধান্য পায়।

দুই.
১৮৬০ সালে মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচনা করেন দুটি প্রহসন, ‘একেই কি বলে সভ্যতা’ এবং ‘বুড় সালিকের ঘাড়ে রোঁ’। সমাজ মানুষকে তীক্ষ্ণভাবে আক্রমণ করা হয়েছে প্রহসন দুটিতে। বেলগাছিয়া নাট্যশালার তাগিদে রচিত প্রহসন দুটি মঞ্চস্থ হয়নি বক্তব্যের কারণে। রচনার সময় অবশ্য দ্বিতীয় প্রহসন ‘বুড় সালিকের ঘাড়ে রোঁ’- এর নাম ছিল ‘ভগ্ন শিব মন্দির’। পরে নাম পরিবর্তন করা হয়। ১৮৬৫ সালের ১৮ জুলাই শোভাবাজার থিয়েট্রিক্যাল সোসাইটি মঞ্চস্থ করে ‘একেই কি বলে সভ্যতা’ আর ১৮৬৬ সালে আরপুলি নাট্যসমাজ মঞ্চস্থ করে ‘বুড় সালিকের ঘাড়ে রোঁ’। প্রহসনদুটি ভিন্নসময়ে মঞ্চায়িত হলেও প্রকাশিত হয়েছিল ১৮৬০ সালে আর প্রকাশক বেলগাছিয়ার রাজা ঈশ্বরচন্দ্র সিংহ।

‘একেই কি বলে সভ্যতা’ দুই অঙ্কের নাটক। প্রথম অঙ্কে দুটি গর্ভাঙ্ক এবং দ্বিতীয় অঙ্কে দুটি গর্ভাঙ্ক রয়েছে। নব্য ইংরেজি শিক্ষিতরা নিজেদের ইংরেজ করে তোলার প্রাণান্তকর চেষ্টায় ব্যস্ত হয়। যেন সভ্য হয়ে ঊঠার এক বিশেষ প্রক্রিয়া। এই প্রহসনে এদের চিন্তন ও ক্রিয়ার সুনিপুন নকশী কাঁথা বুনেছেন রচয়িতা। জমিদারবাবুরা গ্রামে প্রজাদের শোষণ করেন, তার থেকে যে অর্থ আয় হয় তাতে পুত্রকে কলকাতা পাঠান শিক্ষিত করে তোলার জন্য। কিন্তু পুত্র মোসাহেবদের নিয়ে উৎসব করে বেড়ায়, চেষ্টা চলে ইংরেজ হবার। বৈষ্ণব পিতার সন্তান ছুটে যায় মদের আসরে বারবিলাসিনীর নুপুর নিক্কন শুনতে। ধর্ম, জাত, মানবিকবোধ আর মানবসম্পর্কের চিরায়ত শৃঙ্খলা হারায় নেশার ঘোরে। ইংরেজদের ভাষায় অসভ্য বর্বর বাঙালির চোখে সভ্যতার পিঠে দগদগে ঘা স্পষ্ট হয়। এতো শুধু একপক্ষ, অন্যপক্ষে শাসকের মুখও খুঁজে পাওয়া যায় প্রহসনে। ঘুষখোর ইংরেজ আমলাদের প্রতিনিধি হিসেবে প্রহসনে ‘সারজন’ চরিত্রটি এসেছে। পরবর্তীতেও আমলাদের এই চরিত্রের বদল হয়নি। ইংরেজ শোষণের বুদ্ধিদীপ্ত এবং কৌশলী বর্ণনা হিসেবে একে চিহ্নিত করা যায়। এখানে শুধুমাত্র আমলাদের মুখচ্ছবিই আসেনি, ধর্মের ভেকদারীদেরও কথা এসেছে, তা আরও ভয়াবহ। জমিদারনন্দন কালী এবং নব‘র ধর্মবিরুদ্ধ সব কার্যকলাপ জানার পরও বাবাজি চুপ করে থাকেন দক্ষিণার বিনিময়ে। অথচ ধর্মের আলোয়ানের কারণেই তথ্যসংগ্রহের দায়িত্ব পান তিনি। ধর্ম আরও কয়েকটি স্থানে এসেছে। প্রহসন রচনার সতের বছর পূর্বে মধুসূদন ধর্মান্তরিত হয়ে খৃস্টধর্ম গ্রহণ করেন। তাই সনাতনধর্ম ও ইসলাম সম্পর্কিত তার ধারণা নৈর্ব্যক্তিক বলেই ধর্মের ভেক ধরাকে তীক্ষ্ণ ও তীব্য আক্রমণ করা তার পক্ষে সম্ভব হয়েছে। বাবাজিকে দেখেই বারবিলাসিনী বলে- ‘ও থাকি, ঐ মোলার মত কাচা খোলা কে দাঁড়ায়ে রয়েছে দেখ’? অন্যজনের জবাব- ‘...ওলো বামা ওটা মোল্লা নয় ভাই, রসের বৈরিগী ঠাকুর’।

পতিতাপল্লীতে ধর্মগুরুদের আগমনকে স্বাভাবিক মনে হয়েছে পতিতাদের। এখানে সমকালীন ধর্মগুরুরা প্রশ্নের সম্মুখীন হন। বিপরীতক্রমে বলা যায়, ধর্মান্তরিত হবার কারণে খৃস্টধর্মের প্রভাব তার এ ধরণের মানসিকতার কারণ। তবে এ যুক্তি টেকে না কেননা প্রহসনের কোথাও অবশ্য খৃস্টধর্মের প্রচার আসেনি। উপরন্তু মুসলমান কসাইদের সংলাপে তাঁর ধর্মনিরপেক্ষ ভাবনার পরিচয় পাওয়া যায়- ‘ও হারামখোর বেটারগো কি আর দিন আছে? ওরা না মানে আল্লা, না মানে দেবতা’।

উৎকট ইংরেজিচর্চা অপাংক্তেয় করে মাতৃভাষাকে। অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য আর সামাজিক স্বীকৃতির জন্য ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত হবার দিকে ঝুঁকে পড়ে বাঙালি সমাজ। অন্যদিকে শিক্ষার উদ্দেশ্য নির্ধারণ করা হয় কেরানী তৈরি। ফলে প্রকৃত শিক্ষাবঞ্চিতদের মুখ উপনিবেশিক শাসনামলে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর নয়। উল্লেখ্য বাঙালি দু‘শ বছরের পরাধীনতার রক্তপুঁজ মিশ্রিত ঘা বয়ে চলেছে শিক্ষার প্রতিটি স্তরে। ফলে সর্বস্তরে বাংলার প্রচলন অসম্ভব প্রায়। প্রহসনে নবকুমার বাঙালির এ চরিত্রের প্রতিনিধি হয়ে এসেছে- ‘ও আমাকে বাঙ্গালা করে বল্লে না কেন? ও আমাকে মিথ্যাবাদী বললে না কেন? তাতে কোন শালা রাগতো? কিন্তু লাইয়র এ কি বরদাস্ত হয়’।

সংলাপ পর্যবেক্ষণে দেখা যায় ইংরেজি ব্যবহারের বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে, বাংলা শব্দের প্রভাব নেই। ভাষা ব্যবহারই শুধু নয় ইংরেজদের অনুকরণে ব্যাপক মদ পান চলে। প্রহসনে এ সভ্যতার প্রসঙ্গে লেখা হয়- ‘বেহায়ারা আবার বলে কি যে আমরা সায়েবদের মতন সভ্য হয়েছি। হা আমার পোড়া কপাল। মদ মাস খেয়ে ঢলাঢলি কল্লেই কি সভ্য হয়’?

সংলাপটি আপাতদৃষ্টিতে প্রচারসর্বস্ব হলেও ঘটনার অগ্রসরমানতায় এটাই স্বাভাবিক হয়ে উঠে। মদ্যপ স্বামীর নৈতিক স্খলনে ক্ষুদ্ধ স্ত্রীর প্রতিক্রিয়া এ ভাষাতেই যথার্থতা পায়। নব্য ইংরেজদের সভ্যতার মেকীরূপ খুব কাছ থেকে উপলব্ধি করেছেন বলে এর স্বরূপ তার রচনায় খুঁজে পাওয়া যায়। একে প্রচারণার জন্য আরোপিত বলা যায় না। কাহিনীর ক্রম চলমানতায় তা যৌক্তিক হয়ে উঠে। বাবার সামনে নবকুমারের মাতলামী কিংবা বাবাজির অপদস্ত হওয়া। প্রতিটিই এক পথরেখা বরাবর চলেছে। অকস্মাৎ ঘটা ঘটনা নয়।

‘বুড় সালিকের ঘাড়ে রোঁ’ মধুসূদনের আরেকটি প্রহসন। এর কাহিনী আবর্তিত গ্রামের জমিদারের কীর্তিকলাপকে কেন্দ্র করে। এ প্রহসনের জমিদার আর দশজন শোষকের মতোই প্রজাদের লুটে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেন। প্রজার অর্থনৈতিক অবস্থার সঙ্গে তার সম্পর্ক নেই, মূল কাজ খাজনা আদায়। হানিফকে সরাসরি বলেন- ‘তোদের ফসল হৌক আর না হৌক তাতে আমার কি বয়ে গেল’?

তবে বিত্তের সঙ্গে যোগটা যেহেতু ভোগের তাই ভোগের জন্য মনোভঙ্গি বদলাতে সময় অপচয় হয় না। অর্থের অপরিমিত ব্যায়ও তার এ প্রবণতাকে নষ্ট করে না। শোষকের চরিত্রে এটাই চিরন্তন। সামন্ততান্ত্রিক সমাজের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে মধুসূদন এ নাটকের নানা বাঁকে বিচিত্র ভঙ্গিমে তুলে এনেছেন। বাচস্পতি আর ভক্তপ্রসাদের সম্পর্ক, অর্থদানে অনীহা, বাচস্পতির প্রতিশোধপরায়নতা সবটুকুই অর্থনৈতিক সম্পর্ক সূত্রে ঘটে। ভক্তপ্রসাদের নারীভোগ প্রবণতাও অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত। তার কাছে নারী পণ্য, যার কোনো ধর্মীয় পরিচয় নেই। অর্থের বিনিময়ে ভোগ করায় কোনো পাপ থাকে না। অর্থনীতি ধর্ম সম্পর্কহীন, তাই মুসলমানদের অপছন্দ করলেও ভক্তপ্রসাদ মুসলমান নারীকেই ভোগ করতে চায়। মুসলমান হোক কিংবা হিন্দু নারী কেউই তার ভোগতৃষ্ণা থেকে দূরবর্তী নয়। হানিফের স্ত্রী ফাতিমা, ভট্টাচার্যের মেয়ে ইচ্ছে, পীতেশ্বর তেলীর মেয়ে পঞ্চী সবই সমান। বাচস্পতি, হানিফ আর ফাতেমা মিলে ভক্তপ্রসাদকে শুধু অপদস্ত করেনি, জরিমানাও আদায় করেছে। বাচস্পতি ফিরে পায় জমি এবং পঞ্চাশ টাকা, হানিফের আয় দু‘শ। ভক্তপ্রসাদের লোভ এবং জমিরানারদানের অংশে মধুসূদনের শ্রেনী চেতনাকে আবিস্কার করা সম্ভব। অত্যাচারী জমিদার মাথা নোয়ায় নিজের প্রজার কাছে। সামন্ততান্ত্রিক সমাজে শ্রেণীসংগ্রাম থাকলেও তা শ্রেণীবিপ্লবে রূপলাভ করা দুষ্কর। তাই মাইকেলের প্রহসনে শ্রেণীদ্বন্দ্ব থাকলেও শ্রেণীবিপ্লব প্রসঙ্গটি উহ্য।

অত্যাচারী শাসকের প্রধান হাতিয়ার ধর্ম, ধর্মের আবরণে শাসনের দন্ড নিমিষে শোষকের অস্ত্রে পরিণত হয়। ইতিহাসও তার স্বাক্ষ্য দেয়। প্রহসনের চরিত্র ভক্তপ্রসাদও ধর্মকে আশ্রয় করেছেন, রচয়িতা তাকে চিহ্নিত করেন-

বাইরে ছিল সাধুর আকার
মনটা কিন্তু ধর্ম্মধোয়া
পূণ্যখাতায় জমা শূণ্য
ভণ্ডামিতে চারটি পোয়।

প্রহসনদুটিতে চরিত্রসমূহের নানা কার্যকলাপ ও ঘটনার একরৈখিক গতি মধুসূদনের উদ্দেশ্যকে স্পষ্ট করে তোলে। সমকালীন সামাজিক আন্দোলনের প্রচারপত্র হয়ে প্রহসনদ্বয়।

অবশ্য মার্কসীয় নন্দনতত্ত্বের আলোকে এর সমালোচনা করা যায়। লেখকের উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে একটি চিঠিতে পরিচিত এক লেখিকাকে এঙ্গেলস লেখেন- ‘আপনি সমাজতান্ত্রিক উদ্দেশ্যমূলক উপন্যাস লেখেননি বলে আপনার লেখার দোষ ধরিনি আমি’।

সমকালীন সমাজের গঠনকাঠামো, চিন্তন, বিকাশের প্রেক্ষিতে মধুসূদনের সমাজভাবনার আধুনিক চিন্তন প্রোথিত। যাতে তাঁর কালের সামাজিক সংকট পেরিয়ে এ কালের সামাজিক সংকট এবং সমাজ বিকাশকেও যুক্ত করা যায়। মধুসূদনের প্রহসন তাই যাদুঘরের সামগ্রী হয়ে উঠার চেয়ে বর্তমান ক্লেদাক্ত সমাজ, সংকট আর তার গতিপ্রকৃতির সঙ্গে অধিকতর সামঞ্জস্যপূর্ণ।

সালমা সুলতানা : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যতত্বে গবেষণারত শিক্ষার্থী