Full premium theme for CMS
অন্তরঙ্গ আলোর তাপস সেন
Блогът Web EKM Blog очаквайте скоро..
পিতা যেমন তার সন্তানকে অ আ শেখানোর জন্য শিক্ষকের হাতে তুলে দেন, তেমনি আমাকে আমার দলপ্রধান শ্রদ্ধেয় মামুনভাই (মামুনুর রশীদ) হাত ধরে ১৯৮২ সালের দিকে তাপস সেনের হাতে তুলে দিয়েছিলেন, শেক্সপীয়রের ‘কোরিওলেনাস’ নাটকে আলো পরিকল্পনা সহকারী হিসেবে। সেই থেকে তাঁর চলে যাওয়া পর্যন্ত নিকটে নিকটেই ছিলাম। তিনি ছিলেন এক বিশাল মনের মানুষ, তাপস সেন আজ কিংবদন্তী। তিনি ছিলেন গণনাট্য সংঘের অন্যতম সংগঠক, এল.টি.জির সভাপতিও ছিলেন, ছিলেন পশ্চিবঙ্গ নাট্য একাডেমীর সক্রিয় সদস্য। পুরস্কার পেয়েছেন প্রচুর। যার মধ্যে কালিদাশ, সঙ্গীত নাট্য একাডেমী পুরস্কার অন্যতম। তিনি অক্লান্ত পরিশ্রমী ছিলেন। তার আলো সম্পাদের নির্দেশনা হিসেবে সেতু, অঙ্গার, কল্লোল তো রীতিমতো ইতিহাস।
তার সাথে কাজ করতে ও কাজ শিখতে অসীম ধৈর্যের প্রয়োজন। কোনো নাটকে আলো করতে বা সেই নাটকে আলোর ইফেক্ট তৈরি করতে একটির পর একটি আলোর জোগার করতে বলবেন কিন্তু প্রথমেই বলবেন না এই উপকরণ দিয়ে কী হবে। ইফেক্ট তৈরি হওয়ার পর, আলো জ্বলার পর বোঝা যাবে উনি কী করতে চেয়েছিলেন।
তাপস দা চলে যাওয়ার ৩ মাস আগে আমি তাঁর বাসায় (কলকাতায়) গিয়েছিলাম। তাঁকে দেখতে পেয়ে কিছুটা হোঁচটই খেয়েছিলাম, ভয়ও পেয়েছিলাম। চুপচাপ বসে আছেন চেয়ারে। মুখে কথা বলতে পারছেন না। হাতের ইশারায় পাশে বসতে বললেন। কিছুক্ষণ পাশে বসে রইলাম চুপচাপ। এক সময় দাদা বলে উঠলেন- তোর সাথে বোধহয় এ-ই শেষ দেখা।- তখনো বুঝিনি, তাঁর কথাটাই সত্য হবে। ঠিক ঠিক তিনি আর সাক্ষাতের সুযোগ না দিয়ে ২৮ জুন’০৬ তারিখে চলে গেলেন চিরতরে। মঞ্চের আলো ডিমারে আস্তে আস্তে নিভে গেলো, এপার ওপার দুই বাংলার মঞ্চ অন্ধকার হয়ে গেলো।
ঠাণ্ডু রায়হান
আলোক পরিকল্পক। সদস্য- আরণ্যক নাট্যদল, ঢাকা