Bookmaker Bet365.com Bonus The best odds.

Full premium theme for CMS

ঘুরে ফিরে

Блогът Web EKM Blog очаквайте скоро..

জপেনদা’কে জপিয়ে নাটক দেখিয়ে তারপর কেন যে বসে তাঁর মুখনাড়া শুনি, এ-রহস্যের কিনারা নিজেই করতে পারি না। তাঁকে নাটক দেখাতে গেলে চারমিনার খাওয়াতে হয়, চা খাওয়াতে হয়, মিনিবাসের ভাড়া দিতে হয়, তারপর নাটক চলাকালীনই প্রেক্ষাগৃহ থেকে ছুঁড়ে দেওয়া তাঁর কটুবক্তব্য শুনতে হয়, এবং অভিনয়ের পাট চুকলে তাঁর অশ্রাব্য গালিগালাজ হজম করতে হয়- এটাই রেওয়াজ। সেদিন যা ঘটল কহতব্য নয়। আমাদের নাটকটা ছিল ‘এবং হৃদপিণ্ডের হাততালি’। জপেনদা মাঝামাঝি একটা সিটে বসে ঝিমুচ্ছিলেন। হঠাৎ একবার বলে উঠলেন- ঘুরে ফিরে, ঘুরে ফিরে! একবার বাজখাঁই গলায় সম্বোধন- হঠাৎ বলে উঠলেন- বেড়ে বিবিজান! (এতে আবার আমাদের অভিনেত্রীটি সাজঘরে এসে কেঁদে ফেললো)। চরম ক্লাইমেক্সের মুখে জপেনদার সহর্ষ মন্তব্য- দে, পাল দে! দর্শকরা হেসে উঠল, আমরা পাঠ ভুলে গেলাম, চমকিত এক কর্মীর গাফিলতিতে পর্দাটা খানিক পড়ে থতমত খেয়ে আবার উঠে গেল এবং সাজঘরে আমাদের মেয়েটি আবার কেঁদে ফেললো।

নাটকের শেষে আমরা গেলাম জপেনদার কাছে। জপেনটা মনে হয় অনেকক্ষণ থেকে মনের মধ্যে বহুবিধ রোষ পুষছিলেন। আমাদের দেখেই বিশ্রী মুখভঙ্গি করে হেসে উঠলেন, বললেন- এটা কী হল? আপনারা এতক্ষণ ধরে যেটা দেখালেন সেটা কী?

আমি প্রমাদ গুণছি, কেননা দলের অন্যানারা উপস্থিত আছে বলে জপেনদা ‘আপনি’ সম্বোধন করছেন এবং ভদ্র হচ্ছেন। এবং উনি ভদ্র হলে এক ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটে, এটা আমার জানা। আমি বললাম- এ নাটকটার সম্পর্কে বলতে গেলে... জপেনদা বিগলিত হেসে হাত কচলে মেঝেতে পা ঘষে বারদুয়েক মাথা ঝুঁকিয়ে সৌজন্যের এক উৎকট অসহ্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে বললেন- আরো তো অনেক পেশা আছে, যথা, ফিটন গাড়ি চালানো বা ময়দানের ঘাস কেটে কলকাতার ছ্যাকরাগাড়ির ঘোড়াদের খাওয়ানো অথবা শেয়ার মার্কেটের দালালি কিংবা বড়বাজারের ফোড়েমি। আপনাদের মতন শিক্ষিত যুবক- যুবতীরা ওসব লাইনে আসছে না বলেই তো দেশের আজ এই দুরবস্থা।

দলের সকলে হতবাক। সবাই আমার দিকে চেয়ে রইল একটা কোনো ব্যাখ্যার আশায়। জপেনদা এদিকে আরো বিগলিত হয়েছেন; সিট ছেড়ে দাঁড়িয়ে মুঘলাই কায়দায় কুর্নিশ শুরু করেছেন।

বলছেন- এ-নাটকের গল্প বান্দা বুঝতে পারেনি, এবং এর আঙ্গিক সম্পর্কে গোলাম শুধু জানতে চায়, মালটা কী? ওই যে মাঝে মাঝেই বিদঘুটে রঙিন নানা ন্যাকড়া-পরা একদল লোক এসে কোমর দুলিয়ে চাপা এবং বেসুরো কণ্ঠে কীসব গাইছিল, ওটা কী?

আমাদের গাইয়ে ছেলেরা কিঞ্চিৎ উত্তেজিত হচ্ছে দেখে আমি তাড়াতাড়ি বলি- আমরা তরজা-পাঁচালি প্রভৃতি ফর্মকে থিয়েটারে এনে খাঁটি এ-দেশীয় এক রূপরীতি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছি, খাঁটি ভারতীয় এক থিয়েটার গড়বার চেষ্টা করছি।

জপেনদা এমন নত হলেন যে ভয় হল উনি আমার পাদস্পর্শ না করে বসেন, বললেন- আপনার কথা শুনে আমি গলে গেলাম, দ্রব হলাম, তরলায়িত হলাম। যেসব সুর আপনারা আজ শোনালেন সবইতো খ্যামটা। নাচগুলোও খ্যামটা। তাহলে এ-দেশীয় রূপরীতি বলতে আপনি খ্যামটা বোঝেন? আর ভাষাটাও সর্বত্রই চটুল পরিহাসের। খ্যামটার সুরে সখিবেশী পুরুষদের নিতম্ব-হিন্দোলে কিছু ব্যঙ্গকৌতুক- এই হচ্ছে তাহলে খাঁটি ভারতীয় থিয়েটার! ভারতের সর্বত্র একই চলছে- বোম্বাই, পুণা দিল্লি, জয়পুর, কলকাতা। তামাশা বা নৌটংকি বা খ্যামটা। আপনি জানেন কি মহাশয় যে, সারা ভারতের সব থিয়েটার ক্রমশ একরকম হয়ে যাচ্ছে? সবাই খাঁটি ভারতীয় থিয়েটার সৃষ্টির সৃষ্টিছাড়া নেশায় কৌতুকের গান গাইছে, কোমর দোলাচ্ছে দুনিয়া-বর্হিভূত পোশাক পরে হঠাৎ নাটকের মাঝে ঢুকে পড়ে সবচেয়ে সস্তা, সবচেয়ে অশ্লীল, সবচেয়ে কুৎসিত কিছু লোকগীতি গেয়ে রসিকতা করছে? আপনাদের মহান পরীক্ষা-গবেষণাগুলো পরীক্ষাই নয়, সবচেয়ে বস্তাপচা, সবচেয়ে পুরোনো, সবচেয়ে কীটদৃষ্ট।

সে কী ? আমার জিজ্ঞাসা- আপনি লোকগীতিকে এমন অবজ্ঞা করছেন? গণশিল্পকে মঞ্চের আনব না?

জপেনদা বারছয়েক আদাব করে বললেন- গণশিল্প। খ্যামটা গণশিল্প! জনাবের বিপুল জ্ঞানগরিমার পাশে আমি অবোধ শিশুমাত্র। তবে গণশিল্প দুই প্রকারের- এক, জনতার নিজস্ব সৃষ্টি; দুই, লম্পট জমিদারদের মনোরঞ্জনার্থে ওপর থেকে চাপানো। প্রথমটিকে ইংরেজিতে বলে ফোক-আর্ট বা পিপলস্ আর্ট। দ্বিতীয়টিকে বলে ম্যাস আর্ট। প্রথমটি লোকসংস্কৃতির এক ঐতিহ্যপূর্ণ্য প্রকাশ। দ্বিতীয়টি জঘন্য অর্বাচীন এবং অশ্লীল। আপনারা কী এক অলৌকিক ক্ষমতাবলে প্রতিবার বেছে বেছে ওই ম্যাস-আর্টকে আঁকড়ে ধরেন। দেখে আমরা তাজ্জব। আপনাদের উদ্দম দেহ সঞ্চালন, মাতালবাবুদের কামাতুর কোলাহল এবং চিকের পেছনে গ্রামের পদী ময়রানিদের ভ্রুভঙ্গি। সত্যি, আপনাদের জবাব নেই।

আমাদের একজন বলে উঠল- না, শুধু খ্যামটা কেন? আমরা কীর্তনের সুরও বহু ব্যবহার করি।

জপেনদা তার প্রতি হিন্দু নমস্কার জানিয়ে বললেন- এগ্যে কীর্তনের কথা বাদ দিলে কী থাকে? সব লোকগীতির তো একই ধর্ম। সুর তো একঘেঁয়ে, কথাই তো হৃদয়-নিঃসৃত। যেখানে জানতে পারি জমিদার কর্তৃক নিগৃহীন কন্যার দুঃখে মেঘ কালো হয়ে আসে, অথবা রূপবতীর চোখের কাজল লেপটে গিয়ে কেমন দেখায়, এমনকি শূন্যের মাঝারে ঘর বাঁধা কেমন নির্বুদ্ধিতা। সেখানে পাই প্রেম, আবেগ, প্রকৃতি, ধর্ম, দর্শন আর সূক্ষ্ম এক ধরনের কৌতুকবোধ যার আশ্রয় মুহুর্মুহু দ্ব্যর্থবোধক শব্দের ব্যবহার এবং অন্যান্য অলংকার। আপনারা কী করেন? বিষয়বস্তু শেখেন না একদম। লোকগীতি কী বলছে কখনো দেখেন না। শুধু সুরটুকুর কান টাকড়ে তার ওপর সওয়ার হন অকিঞ্চিৎকর শস্তা সব কটাক্ষ নিয়ে। কীর্তনের সুর নিয়ে যদি বলেন: ‘আমি বাবা নিককন সাহেব হাউ মাউ খাউ’, সেটা হয় কদর্ষ মুখভ্যাঙানি। ওতে রাজনৈতিক প্রচারও বাধা পায়, কারণ ফর্মটা কদর্য হলে বক্তব্য মার খাবেই। যে-ফর্মে প্রকাশিত হওয়া উচিত জনতার গভীর বেদনা ও গভীরতর বিদ্রোহচেতনা, যে ফর্মে খুব সহজে বলা যেত আসন্ন বিপ্লবের গম্ভীর কথা- যেমন বলেছেন বিজন ভট্টাচার্য, হেমাঙ্গ বিশ্বাস, বিনয় রায়েরা- সে ফর্ম আপনাদের হাতে হয়ে উঠেছে ছ্যাবলামির বাহন। কারণটা অবশ্য এ-অধম বোঝে। লোকশিল্পের আঙ্গিক ব্যবহার করতে গেলে আগে কবি হতে হয়, লোককবির অন্তরের সঙ্গে পরিচিত হতে হয়, লোককাব্যের ব্যাকরণে সিদ্ধ হতে হয়। কথাকে আগে ভাবগভীর করে সাজাতে না জানলে, বিজন ভট্টাচার্যের ‘জিয়নকন্যার’ মতন কাব্য সৃষ্টি করতে না জানলে, গ্রামীণ সুর চিরদিনই বাঁদরের মুখে খেঁচনির মতন শোনাবে। আপনারা কবি নন, তাই জমিদারের ভাড়া করা বিদূষকের মতন ছড়া লেখেন যা মিনিটে দু-লাইন করে লেখা যায়। তারপর তাতে কীর্তনের সুর বসিয়ে দিয়েই ভাবেন লোকশিল্পকে এনে ফেলেছি মঞ্চে। একদিক থেকে আপনারা ক্যাবারেওলা নাটকের চেয়েও অশ্লীল। আপনারা জনতার একটি মহান ঐতিহ্যের মস্তক চিবিয়ে খাচ্ছেন। যে নাটকের নাম ‘এবং হৃৎপিণ্ডের হাততালি’ তার কুশীলব মহাশয়েরা আর বাংলার লোকবাক্য বুঝবেন কোঁথেকে? কোন ফর্মে কী পরিবেশন করতে হয় তা কোথেকে বুঝবেন? লোকগীতির কনটেন্ট বাদ দিয়ে শুধু ফর্ম নিয়ে তারাই তো মাতবেন এবং সে-মাতামাতির ফলেই এককালে হাপ-আখড়াই জন্ম নিয়েছিল, আর আজ পয়দা হয়েছেন আপনারা।

আমাদের সেই মেয়েটি এই সময়ে আবার কেঁদে ফেললো। জপেনদা বিনয়ী হাস্যে দৃশ্যটি উপভোগ করতে লাগলেন। আমার গা জ্বলে গেল। মেয়েটি খানিক প্রকৃতিস্থ হতে জপেনদা বললেন- রুমাল দেব?

এতে মেয়েটি আবার কাঁদল। তখন জপেনদা হাই তুলে জিজ্ঞাসা করলেন- আর ওই যে খাঁটি ভারতীয় থিয়েটার বলছেন সে- মালটা কী?

আমি বললাম- থিয়েটার বস্তুটি ইয়োরোপীয়। আমাদের খুঁজতে হবে এমন একটা থিয়েটার যা ভারতীয় বৈশিষ্ট্য হবে।

জপেনদা বললেন- কোন ভাষায়?

কী? আমরা অনেকেই থতমত খেয়ে শুধোলাম।

কোন ভাষার থিয়েটার? জপেনদার প্রশ্নবান- কোন বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল? মারাঠি, গুজরাটি, পাঞ্জাবি, মালয়ালি- বলুন!

আমরা সকলে বললাম- যার যার নিজের!

তাহলে খাঁটি ভারতীয় থিয়েটার কথাটা গাধার মতন বলেন কেন?

জপেনদার ভদ্রতার মুখোশ খসে আর কি- থিয়েটার তো ভাষার ওপর নির্ভশীল। যে দেশে এতগুলো ভাষা এতগুলো সংস্কৃতি সেদেশে একটি ‘খাঁটি ভারতীয় থিয়েটার’ কথাটা আকাট্য গর্দভের কথা।

আমি তাড়াতাড়ি বললাম- না, স্তালিন বলেছিলেন শিল্পসাহিত্য হবে কনটেন্টের ক্ষেত্রে সমাজতান্ত্রিক, কিন্তু ফর্মের ক্ষেত্রে ন্যাশনাল। যে দেশে বহু নেশন সে দেশে একাধিক ন্যাশনাল ফর্ম গড়ে উঠবে। তাই আমরা চেষ্টা করছি যাত্রার বৈশিষ্ট্য বাংলার থিয়েটারকে ভূষিত করে- তাকে ইয়ে করে-

যাত্রার কোন বৈশিষ্ট্য আপনারা বাংলার থিয়েটারকে ‘ইয়ে’ করছেন?- জপেনদার সমাহিত প্রশ্ন।

প্রথমটা আমার মাথায় কিছুই খেলল না। পাশ থেকে আমাদের দলের গাবলু বালল- ধরা যাক গান। এই যে এত গান এ তো যাত্রারই ইয়ে। লোকসংগীতের সুর যে আমরা থিয়েটারে নিয়ে আসছি, সেটা তো যাত্রা থেকেই শিখছি।

জপেনদা সিট ছেড়ে মেঝেয় বসলেন, হাতজোড় করে বললেন- যাত্রায় লোকসংগীত নেই, সব ক্ল্যাসিকাল। সব মালকোশ, দেশ, পুরিয়া, বাগেশ্রী, ভৈরোঁর খেলা।

গাবলু জীবনে যাত্রা দেখেনি, তাই আর কথা না বাড়িয়ে সরে পড়ল। আমি বললাম- যাত্রার অন্যান্য ইয়ে আমরা আনছি স্টেজে। যেমন বিবেক। আজ দেখলেন না?

জপেনদা বললেন- যাত্রার বিবেক উঠে গেছে বললেই চলে। আপনাদের গায়করা যাদের নকল করে আজ নাচলেন, সেই সখির দলও উঠে গেছে। ইদানিং বোম্বাই, দিল্লি, কর্মকর্তা সর্বত্র আপনাদের মতন শিক্ষাগর্বী একদল সুবেশ ছেলেপুলে লোকনাট্য- লোকনাট্য করে ছাতারের নৃত্য শুরু করেছেন। কিন্তু তাঁরা মঞ্চে যা আনছেন তা স্বপ্নে দেখা লোকনাট্য, বইয়ে পড়া লোকনাট্য। বাস্তবের-১৯৭৪-এর- লোকনাট্যের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। আপনারা যেসব ঐতিহ্যের কথা বইয়ে পড়ে লম্বঝম্প লাগিয়েছেন তার ধারক ও বাহকরা খেতে না পেয়ে একে একে মরে গেছেন গত দু’দশকের মধ্যে। যা নেই তার জন্য এমন সাধনা সচরাচর দেখা যায় না। নিরাবলম্ব নেতির জন্যে এই যোগসাধনা তান্ত্রিকদের হার মানায়। আপনারা ডোডো পাখির খোঁজে বেরিয়েছেন।

আমি উষ্ণ স্বরে বললাম- যাত্রার সর্বনাশ করছে কিছু কালাপাহাড়। এরা কলকাতার থিয়েটার থেকে গিয়ে চড়াও হয়েছে যাত্রার ওপর, যাত্রাকে থিয়েটার বানাচ্ছে। এর মাইক চালু করেছে, যাত্রায় আধুনিক বিষয়বস্তুর নামে যাত্রা-পালার সেই আদিম বলিষ্ঠতার বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। সেই পুরাতনকে আবার ফিরিয়ে আনতে হবে।

জপেনদা মাথাটা দু’বার মেঝেতে ঠকাস ঠকাস করে ঠুকে বললেন- হুজুরের এজলাসে অধমের নিবেদন এই, বাপের জন্মে পুরাতনকে আর ফিরিয়ে আনতে পারবেন না ধর্মাবতার। ইতিহাসকে কান ধরে থামিয়ে রাখবেন এমন ক্ষমতা আপনার বাপেরই নেই, আপনি কোন হুলিদাস? যাত্রার রূপান্তর ঘটিয়েছে সময়, মহাকাল, সমাজের বিবর্তন। আপনারা লাইব্রেরিতে বসে লোকনাট্য পড়েন হুজুর, গ্রামের ভাঙাগড়াটা বোধহয় দেখতে পান না। পঞ্চাশের দশক থেকে চলছে বিষম ভাঙন, গ্রামীণ সভ্যতার ধ্বংস। যাত্রার দর্শকের রুচিতে ঘটে গেছে বিপ্লব। চা-বাগান আর কয়লাখনির মজদুর যারা যাত্রার প্রধান পৃষ্ঠপোষক, গ্রামের আর মফঃস্বল শহরের অগণিত দর্শক, তারাই নলদময়ন্তীর কাহিনী থেকে যাত্রাকে নিয়ে এসেছে লেনিন আর মাও সে-তুং-এ । তারাই বিবেকের গানকে বাহুল্য জ্ঞানে বর্জন করেছে, পুরাতন ঢং-এর গম্ভীর অভিনয়কে প্যাঁক দিয়ে বন্ধ করে থিয়েটারি বাস্তববাদী অভিনয় দাবি করেছে। মাইক ছাড়া আজকাল কী করে অভিনয় হবে হুজুর বলতে পারেন? আগে জমিদারের ঠাকুরবাড়ির আঙিনায় পাঁচশো লোক হলে মনে করা হত অসম্ভব ভিড়। এখন যে একেক বারে বিশ হাজার পর্যন্ত লোক হয়। পৃথিবীতে কোন বাপের বেটা আছে যে এই জনসমুদ্রকে খালি গলায় পালা শোনায়? ‘যাত্রার সব গেল’ ক্রন্দন তুলে যারা নন্দ ঘোষ খুঁজছেন, স্কেপগেট খুঁজে বেড়াচ্ছেন, তাঁরা বোঝেন না ঔপনিবেশিক দেশে চাষীর অর্থনৈতিক ধ্বংসের সঙ্গে তার সংস্কৃতি ধ্বংস হয়। কোনো উপায়ে তাকে রোধ করা যায় না- একমাত্র শ্রমিক-বিপ্লবও অনেক ক্ষেত্রে পুরাতনকে আর ফিরিয়ে আনতে পারে না। চীনে খাঁটি সংগীতকে পুরোপুরি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা যায়নি; ইয়োরোপীয় সংগীতকে পুরোপুরি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা যায়নি; ইয়োরোপীয় সংগীতের প্রবল ও ব্যাপক প্রভাবকে অস্বীকার না করে তাকে আলিঙ্গন করে নেওয়া হয়েছে। আর আপনি মশাই কোন নিধিরাম সর্দার এলেন যে ভারতের সামাজিক অবক্ষয়কে ছেলেদের একটি বিলাসমাত্র। শিল্পকে যে সংগ্রামের হাতিয়ার মনে করে সে মৃত অতীতের জন্য কাঁদে না। সে বর্তমানকে বলিষ্ঠভাবে গ্রহণ করে বর্তমানের মুখোমুখি দাঁড়ায় বীরের মতন। সে মূল্যায়ন করে দেখে যা আছে তার কতটা ইতিবাচক, কতটা ভালো, কতটা কার্যকরী। সে দেখতে পায় যাত্রার এক মহৎ দিক বিলুপ্ত হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে সে এ-ও দেখতে পায়, আরেক মহৎ দিক খুলে গেছে। সে দেখে, যাত্রা এখন আর শান্ত পল্লীর শ্রমক্লান্ত মুষ্টিমেয় মানুষের ধর্মীয় সান্ত্বনায় নেই। যাত্রা এখন লক্ষ লক্ষ শ্রমিক-কৃষকের রাজনৈতিক ও সামাজিক চেতনার দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। মাও সে-তুং-এর মতে বিপ্লবী নাটকের প্রথম ও সর্বপ্রধান শর্ত হল সে প্রকৃত মেহনতি মানুষের সামনে অভিনীত হচ্ছে কিনা। সে-শর্ত পূরণ করেছে আমাদের যাত্রা। আর সেটা দেখে কোথায় উদ্বুদ্ধ হবেন, তা না, নাকে কান্না জুড়েছেন?

আমি কী যেন একটা বলতে গেছি, আর জপেনদা চিৎকার করে আমায় থামিয়ে দিয়েছেন- আগে শুনে নিন না। আপনার কথাবার্তা শুনেই মনে হয় অনেক কিছু আপনার জানা বাকি! নাটক যার কাছে প্রচারের অস্ত্র তার ফর্মটা গৌণ ব্যাপার। যেনতেন প্রকারের ছলে-বলে-কৌশলে কথাগুলো দর্শকের অন্তরে গেঁথে দেওয়াই হচ্ছে একমাত্র লক্ষ্য, স্তালিন যখন বলেন ফর্ম হবে জাতীয় বৈশিষ্ট্যে ভূষিত, সেটা হচ্ছে কৌশলগত প্রশ্ন। জাতীয় বৈশিষ্ট্যে ভূষিত হলে সাধারণত ফর্ম সবচেয়ে তীক্ষ্ণ ও লোকগ্রাহ্য হয়। কিন্তু যে বৈশিষ্ট্য লুপ্ত হয়ে গেছে, সেটাকে আবার জোর করে ফিরিয়ে আনলে লোক মেনে নেবে কি? বাংলার জাতীয় বৈশিষ্ট্য মানে বর্তমানের জীবন্ত বৈশিষ্ট্য। সে বৈশিষ্ট্যটা কী আগে বুঝুন, তবে না সেটা ব্যবহার করতে পারবেন। যা নেই তার গেছনে ছোটে শুধু সে, যে ফর্মের জন্য ফর্মের পূজারী। স্তালিন তা বলেননি; বিষয়বস্তু ও প্রচার যার কাছে প্রধান, সে দেখে কী আছে এবং  তাকে আমি কী করে আয়ত্তে আনব, ভাঙবো-চুরবো, ব্যবহার করব। যে মার্কসবাদী তার কাছে কোনো ফর্মই তো বিদেশি নয়। বিদেশ কথাটাই তো আমরা মানি না। এ-বিশ্বের সব ফর্মই তো আমার। নইলে আইজেনস্টাইন কেন জাপানের কাছে মন্টার শেখেন আর ব্রেখট কেন পিকিং অপেরার ফর্ম নিয়ে আসেন জার্মানিতে? আমাদের কাছে ওসব ‘ভারতীয়’ আর ‘বাঙালি’ সম্পর্কে গুল মেরে কোনো লাভ নেই। যাত্রার ওপর থিয়েটার ও চলচ্চিত্রের প্রভাব পড়েছে, কিন্তু ক্ষতি হয়েছে- ঠিক আছে! কিন্তু মহত্তর সম্ভাবনা উন্মুক্ত হয়েছে সামনে। আপনি বলেছেন, পুরাতন আদিম পালা ফিরিয়ে আনতে হবে। আমি বলছি, সেই পালা আঁকড়ে থাকলে যাত্রা এতদিনে উঠে যেত। অন্যান্য বহু বিশুদ্ধ লোকগীতির মতন যাত্রা আজ অতীতের স্মৃতি হয়ে যেত। আজকের জীবন্ত নাটক এসে যাত্রাকে বাঁচিয়েছে, সময়ের সঙ্গে তাল রেখে সে এগুচ্ছে। বিদেশি টুরিস্টদের জন্য জাদুঘরে রক্ষিত কোনো নিদর্শন হয়ে সে থাকেনি। সে অগ্রসরমান, যুগের দর্পণ, একালের ব্যাখ্যাকার, সমসাময়িক ইতিহাসের সূত্রধার। হুজুরালি, পিকিং অপেরার মতন সূক্ষè ও প্রাচীন ফর্মকেও এগিয়ে এসে আজকের বিপ্লবের কাহিনী আশ্রয় করতে হয়েছে, নইলে তারও মৃত্যু ছিল অনিবার্য। স্তালিনের কথা আমাদের মস্তিস্কে ঢুকবে- এ আশা করা অবশ্য আমাদের বাতুলতা। মাও সে-তুং যে বলেছেন, জনতার আজকের স্তর থেকে নাট্যপ্রচার শুরু হবে এবং প্রতি মুহূর্তে জনতাকে সঙ্গে নিয়ে উচ্চতর স্তরে উঠতে হবে, এসব আপনারা বুঝবেন কেন? জনতার আজকের স্তরে যাত্রার যে চেহারা সেটাই যে স্তালিনের মতে আজকের জাতীয় বৈশিষ্ট্য, এটা বুঝতে গেলে আগে ডায়ালেকটিকস্ বুঝতে হয়। সেই সময় হুজুরদের কোথায়? হুজুরদের সময় চলে যাচ্ছে রিংগো স্টারের গান শুনতে শুনতে। স্তালিন- মাওরা সনাতনপস্থী বিশুদ্ধতাবাদী নন, নূতন সংস্কৃতির স্রষ্টা। তারা চেয়েছিলেন আপনারা জনতার বর্তমানে অবগাহন করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবেন; জনতাকে উচ্চতর ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাবেন। কিন্তু ‘বর্তমান চুলোয় যাক’ বলে পুরাতত্ত্বে ফিরে যেতে কেউ বলেননি। আজকের বাস্তব অবস্থা দেখে ‘গেল গেল’ রব তুলে শুধু চণ্ডীমণ্ডপের জোতদাররা, ক্রন্দনে মুখর হয় শুধু কাপুরুষেরা- আর এমেচার স্বপ্নবিলাসীরা।

কিছুক্ষণ আমাদের থমথমে মুখগুলো দেখে নিয়ে উপভোগের স্মিতহাস্যে উজ্জ্বল হয়ে জপেনদা বলে চললেন- তাহলে যাত্রা থেকে যা শিখতে চাইছেন তা যখন যাত্রায় আর নেই, তখন কী শিখবেন বলুন তো?

যাত্রা প্রায় থিয়েটার হয়ে গেলে থিয়েটার আর কী শিখবে?- বলল মাকলু, আমাদের হিরো।

অহো অহো কী কথা!- জপেনদার প্রশংসার দাপটে মাকলু চুপসে গেছে- ফর্ম না শিখতে পারলে আর কিছুই শেখার নেই! প্রমাণ হয়ে গেল আপনারা ফর্মালিস্ট, নিছক ফর্মের অন্বেষক, শুদ্ধ আঙ্গিকের উপাসক।

মাকলুর কাঁপা গলায় প্রশ্ন- কী শিখবো বলে দিন না!

জপেনদার বক্তৃতা শুরু হল- শিখবেন নাট্যরচনার কৌশল, লক্ষ নিরক্ষর মানুষকে শিক্ষাদানের কলা, উত্তেজনাপূর্ণ ঘটনা সাজাবার পদ্ধতি। শিখবেন মধ্যবিত্ত দর্শককে ছেড়ে অন্যান্য শ্রেণীর কাছে যাওয়া। শিখবেন দুর্বোধ্য সব বিচ্ছিন্নতাবাদী কিমিতিবাদী নাটককে জলাঞ্জলি দেওয়া। ও-নাটক নিয়ে প্রকৃত জনতার সামনে গেলে মারধোর খেয়ে যাবেন জানেনই তো। কোমর বেঁধে যাত্রার কাছ থেকে শিখতে শুরু করুন সহজবোধ্য ভাষায় সহজগ্রাজ্য গল্পের কাঠামোয় কী করে মহত্তর চিন্তা যোজন করা যায়। চেষ্টাকৃত জটিলতা হচ্ছে দেউলিয়া মানসের বিকার। যার সত্যিই কিছু বলার আছে তাকে কসরৎ করতে হয় না। সে ইবসেন, চেকভ, গোর্কি, ব্রেখট বা হোকুট এর মতন সরল ও অনাড়ম্বর। এই সারল্য শিখুন এসে যাত্রার কাছে। কলকাতার নগ্ন নারীর বস্ত্রবিপ্লব আর একক নায়কের হতাশা শিকেয় তুলে যাত্রার কাছে শিখুন গল্পের গুরুত্ব, ঘটনার মূল্য, সংঘাত-প্রতিঘাতের বিন্যাস। শিখুন বাংলার সত্যিকারের মানুষের জাতীয় নাট্য-বৈশিষ্ট্যটা কী, কী সে শুনতে ও দেখতে চায়। সেই প্যাটার্নকে প্রথমেই অবজ্ঞাভরে বাদ না দিয়ে, সেই প্যাটার্নে যদি আরোপ করতে পারেন দর্শন ও মহৎ চিন্তা, তবে বুঝি বাহাদুর। নাক সেঁটকানো ইনটেলেকচুয়াল সেজে যাত্রার পালাকারদের গায়ে নিষ্ঠীবন ত্যাগ করলে সেটা হবে আপনাদেরই সজ্ঞান আত্মহত্যা, যাত্রার কিছু এসে যাবে না। আপনারা এক বন্ধ্যা শ্রেণীর খিদমতে কালাতিপাত করে অকালে ঝরে যাবেন। ভবিষ্যতের স্রষ্টা যে মেহনতি মানুষ তার সংস্পর্শে না আসতে পারলে আপনাদের শৈল্পিক মৃত্যু অবধারিত।

জপেনদা আমারই দেওয়া একটি চারমিনার ধরিয়ে তারপর পুনরায় জ্ঞানোদগার করতে প্রস্তুত হলেন- তাহলে বাংলা থিয়েটারকে বাংলা করার দিকে ঝোঁক না দিয়ে থিয়েটার করার দিকে ঝোঁক দেওয়া হোক। আপনারা বললেন থিয়েটার ইয়োরোপীয়, তাই বদলাতে হবে, ভারতীয় করতে হবে। কোন বস্তুটা বদলাবেন দাদা? পর্দা, উইংস, আলো? মেক-আপ? কস্টিউম? কী বদলালে জিনিসটা হঠাৎ ব্রাহ্মণ্যধর্মে দীক্ষিত হবে, তার ম্লেচ্ছভাব কাটবে?

ওভাবে লিস্ট ধরে ধরে এসব জিনিস হয় না- আমি বললাম- থিয়েটারকে দেশজ প্রভাবে আনতে হবে।

এসেছেই তো- বললেন জপেনদা- নইলে গিরিশবাবুরা অতদিন ধরে কী করলেন?

আমি থতমত খেতেই জপেনদা আক্রমণ তীব্র করে তুললেন- গিরিশ-ক্ষীরোদ-দ্বিজেন্দ্রলাল-রবীন্দ্রনাথ তো সে-কাজটা আগেই করে দিয়ে গেছেন। যতটুকু বাঙালি হওয়া উচিত ছিল ততটুকু অনেক আগেই হয়ে গেছে। অবশ্য আপনারা সেসব নাটক পড়েননি, সময় হয়নি পড়ার! যাত্রা থেকে মহাভারত-রামায়ণ থেকে বুদ্দ-জাতক থেকে অনবরত কাহিনী নিয়ে সেটা বাঙালির ভাষায় তাঁরা বলে গেছেন। এখন কাজ ছিল সে- ঐতিহ্যটাকে আবার ধরা, কেননা একদল অর্থগৃধু লোক এসে বাংলা থিয়েটারকে নাইট ক্লাব বানাচ্ছে, মাইকেল-গিরিশ-রবীন্দ্রনাথের মঞ্চে ক্যাবারে তুলেছে। মহাশয়দের কাজ হচ্ছে এইসব শিল্পবোধহীন ব্যক্তিদের বিদায় করে গিরিশ-রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করা, থিয়েটারকে আবার থিয়েটার বানোনো। গিরিশের পথটা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে সে-পথে এগুনো। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা নয়, বা গিরিশের বিকৃতি ঘটিয়ে চপল-চটুল খ্যামটার ন্যাকামি নয়। এসব যাঁরা করছেন গিরিশদের হেয় এবং তুচ্ছ প্রতিপন্ন করছেন। ফলে ক্যাবারেওলাদের পাটোয়ারি খেলার সুবিধা হচ্ছে। লোকে ভাবছে আমাদের ঐতিহ্য কিছু নেই আর ছিন্নমূল মানুষই ক্যাবারের ভক্ত হয়, যেমন হয় গাঁজা-ভাঙ-এল.এস.ডি-র। না, বাংলা থিয়েটারের গোড়াপত্তন আগেই করে গেছেন পূর্বসূরীরা, আপনারা তার ওপর ইমারত গড়–ন। ইয়োরোপীয় আবার কী? গিরিশ-ক্ষীরোদ-দ্বিজেন শেক্সপীয়র থেকে নিতে দ্বিধাবোধ করেননি, সমসাময়িক অসংখ্য বিদেশি নাটকের কাছে তাঁরা ঋণী, তৎকালীন ইয়োরোপীয় থিয়েটারের ফর্ম তাঁরা ব্যাপক ব্যবহার করেছেন। হঠাৎ আপনাদের মতন যুবা-পুরুষদের এই ছুৎমার্গ কবে থেকে হল? এরপর কি বিদেশি জ্ঞানে মোটরগাড়ি বর্জন করবেন?  চলচ্চিত্র শিল্প বন্ধ করে দেবেন? সার্জনকে বলবেন বিদেশি যন্ত্র বর্জন করো? ফাউনটেন পেন ছেড়ে খাগের কলম ধরবেন? গেয়ো অশিক্ষিত জটাধারী বেকুবদের কথাগুলো হঠাৎ আপনাদের মুখে কেন?

আমি বললাম- উপমাটা ঠিক হল কি? যন্ত্র এক জিনিস আর-

জপেনদা বলে উঠেলেন- ফর্ম একটা যন্ত্রই। একটা অস্ত্র। আসল হচ্ছে বিষয়বস্তু। সেটাকে প্রকাশ করতে যা দরকার আমি নেব। ইয়োরোপীয় থিয়েটারের সর্বাধুনিক গবেষণাও আমার কাছে জরুরি। দরকার হলে কাবুকি বা পিকিং অপেরা কিছুই আমার কাছে অচ্ছুৎ নয়। মার্কসবাদীরা আন্তর্জাতিকতাবাদী। তাঁরা বিশ্বাস করেন যারা বিশ্বে পুঁজিবাদের অবসানের পর মানুষ অতি দ্রুত পরস্পরের সংস্কৃতিকে আপন করে নেবে, পরস্পরের সংস্কৃতি পরস্পরকে প্রভাবাম্বিত করবে। কলকাতার মানুষ বেটোফেনকে ভালোবাসবে, ভিয়েনা তন্ময় হয়ে শুনবে রাগ-দরবারি। আর সেখানে যে ইয়োরোপীয় থিয়েটার ইতোমধ্যেই আমাদের খুব কাছের জিনিস হয়ে গেছে তাকে বাদ দিতে চান? আপনারা কি একেবারেই গবেট হুজুর? আপনারা এক কাজ করুন- ওলাইচণ্ডীর মন্দিরে গিয়ে পুজো দিন। আপনাদের জাতীয়তাবাদে বিদেশের বিজ্ঞানের কোনো স্থান না থাকলে ওই মন্দিরই প্রকৃষ্ট স্থান, আধুনিক নানা যন্ত্রে নিয়ন্ত্রিত রঙ্গমঞ্চ মাড়াবেন না- দোহাই আপনাদের।

এই বলে আমার পকেটে হাত ঢুকিয়ে ফেরার ভাড়াটি হস্তগত করে জপেনদা প্রস্থান করলেন।

[লেখাটি ‘উৎপল দত্তের গদ্য সংগ্রহ ১, নাট্যচিন্তা’ থেকে পুনর্মূদ্রণ করা হলো]

উৎপল দত্ত: বাঙলানাট্যের প্রবাদ পুরুষ