Bookmaker Bet365.com Bonus The best odds.

Full premium theme for CMS

ঋত্বিকের দেশ বিদেশের নাট্যমেলা

Written by বিদ্যুৎ মৈত্র.

Блогът Web EKM Blog очаквайте скоро..

ডিসেম্বর ২০১৬।
এই মাসের ৯ তারিখ থেকে ৩৭ বছরের নাট্যদল ‘ঋত্বিক’-এর ১৬ বছর বয়সী ‘দেশ বিদেশের নাট্যমেলা’ শুরু হয় সাড়ম্বরে। উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের নাট্যকর্মী গোলাম কুদ্দুস। ভুল বললাম- আমাদের গোলাম কুদ্দুস। ভারতের গোলাম কুদ্দুস। কাঁটাতারের বেড়া তুলে দিলে অখণ্ড পৃথিবীতে একটাই উঠোন। এটাই সত্যি। রাজনৈতিক বেড়া তুলে দিলে অখণ্ড পৃথিবীতে একটাই সংস্কৃতির উঠোন। ‘রাজনৈতিক বিভেদ থাকলেও সংস্কৃৃতির বিভেদ যেনো না থাকে’- এ কথা শিখিয়ে যান আমাদের গোলাম সাহেব। উদ্বোধক হিসেবে তিনি বলে যান বাংলাদেশ ও ভারতের নাট্যদলগুলোর নাট্যচর্চার পার্থক্য ও মিল নিয়েই এগিয়ে চলেছে নাট্যচর্চা।

বাংলাদেশের বিভিন্ন নাট্যদল প্রায় প্রতি বছর তাদের নাটক নিয়ে বহরমপুরে আসে। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বরং বলা ভালো এ বছর ‘বিদেশি’ বাংলাদেশ-ই ঋত্বিকের ‘দেশ বিদেশের নাট্যমেলা’র নাম সার্থক করেছে। বহরমপুরবাসীও নাট্যমেলায় যেদিন বাংলাদেশের নাটক থাকে, ওই দিনটি আলাদা করে বেছে রাখেন তাদের নাট্যতালিকায়। এই বছর বাংলাদেশের ‘শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্র’, ‘নান্দীমুখ’, ‘পালাকার’-এর মতো বিশিষ্ট নাটকের দলগুলো তাদের সৃজনি নিয়ে তিনদিন শহরবাসীর চিন্তার ইন্ধন যুগিয়ে গেলো। বিনয়ে আর ভালোবাসায় আদায় করে নিল জেলাবাসীর হৃদয়ের উষ্ণতা। এ ছাড়াও ১১ দিনে ১৭ টি নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে।

৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ইবসেনের নাটক ‘গোস্ট’ মঞ্চস্থের মধ্য দিয়ে ঋত্বিক নিজেই যে নারীকেন্দ্রিক নাটকের সূচনা করলো তার রেশ থাকলো ১৯ শে ডিসেম্বর অর্থাৎ শেষ দিন পর্যন্ত। যদিও ‘কোজাগরী’, ‘জোলা আর সাত ভূত’, ‘প্রলাপ’, ‘ব্রেকিং নিউজ’, ‘গণশত্রু’, এই ধরনের নয়। আর এতোগুলো নাটক দেখতে দেখতে দর্শক নাটকের বিষয়বস্তুর সঙ্গে উপভোগ করতে থাকেন বিভিন্ন নাট্যদলের পরিচালকের বিষয়-ভাবনার উপস্থাপনা। মঞ্চে আলোর ব্যবহারের সাথে সাথে শব্দের ব্যবহার। এমনিতে বাংলা নাটক তার পথ হারিয়েছে। বাদল সরকার বলেছিলেন ‘থিয়েটার রঙিন কল্পনার বুদবুদ নয়। থিয়েটার জীবনের নগ্ন কঠিন চেতনা।’ বেঁচে থাকতে গেলে আপস করতে হয় আর সেটাই একমাত্র পথ তা শেখাতে শুরু করেছেন বাংলা নাটকের পরিচালকেরা। নাটক মঞ্চায়নে পাছে কেউ চটে না যায়, এই পন্থা অবলম্বন করায় নাটক তার সাহসিকতার পথ ত্যাগ হারিয়েছে। তবুও বেলঘোরিয়ার ‘অভিমুখ’ প্রযোজিত কৌশিক চট্টোপাধ্যায়ের ‘কোজাগরী’ নাট্যমেলায় আশার আলো দেখিয়েছে নিশ্চয়। আর ‘এএলটি’ প্রযোজিত ‘লং মার্চ’-এ অভিনেতাদের দৈহিক অভিনয় সত্যিই মনে রাখবার মতো। ‘রাঁয়বেশে’র সাথে শব্দপ্রয়োগ উপস্থিত দর্শক শ্রোতাদের মন কেড়ে নেয়। তবে বড় বড় পরিচালকের  পাশে দাঁড়িয়ে কয়েকজন বাচ্চাছেলের (গুজব যাদবপুর) ‘প্রলাপ’ই ছিল ১০ ডিসেম্বর সন্ধ্যার ‘ব্রেকিং নিউজ’। তবে ১৩ ডিসেম্বর সকাল এগারোটার নাটক দেখলো এক লিভিং লিজেন্ডকে। মায়ায় বেঁধে গেলো শীতের দুপুর। মন্ত্রমুগ্ধ দর্শক শুনলেন ‘মায়ার কথকতা’। আর বাংলাদেশের ‘নান্দীমুখ’-এর ‘ঊর্নাজাল’ বাদ দিলে এই পর্ব থেকেই শুরু হলো এবারের নাট্যমেলার নারীকেন্দ্রিক নাটকের সূচনা। ঐদিন সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হলো অর্ণ মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘অথৈ’। ‘অথৈ’ শেক্সপীয়রের ‘ওথেলো’ অবলম্বনে নির্মিত হলেও শেক্সপীয়র সেখানে নেই। টানা তিনঘন্টা নাটকটি দেখতে গিয়ে একটিবারের জন্যও দর্শক ঘাড়-মাথা চুলকানোর সময়টুকুও নষ্ট করেননি। অর্ণ আর ‘অনির্বান’-এর সৌজন্যে দশ মিনিটের বিরতিও তাদের আসন থেকে ওঠাতে পারেনি ‘অথৈ’। কিন্তু ঠিক তার পরেরদিন আসল ‘ওথেলো’ দেখতে বসে নাটুয়া গৌতম হালদারকে খুঁড়তে খুঁড়তেই নটে গাছটি মুড়িয়ে গেলো।

১৫ ডিসেম্বর ছিল অনন্ত হিরা নির্দেশিত ও ‘শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্র’ প্রযোজিত নাটক ‘তৃতীয় একজন’। যদিও ‘শব্দ’ অনন্ত হিরার নিজস্ব দল নয়, তাঁর ‘প্রাঙ্গণেমোর’ এর আগে এখানে নাটক মঞ্চস্থ করে গেছে বহুবার। এই নাটকে দুটি চরিত্র। তুলি আর সামির। আর তাদের প্রেম, ভালোবাসা, বিশ্বাস আর অবিশ্বাসেরর দাম্পত্য জীবন। আর দাম্পত্য জীবন মানেই পুরুষ ও নারীর গার্হস্থ জীবনের যে চিত্রটি চোখের সামনে ভেসে ওঠে তাতে বিশ্বাসই একমাত্র ভরসা ও দুর্ভরসা। পুরুষ শাষিত সমাজে নারী স্বাধীনতার কথা তো সেই কবে থেকেই চলে আসছে। পুরুষের অধিকারে নারী হয়ে ওঠে গৃহকার্যে নিপুণা আর ব্যক্তিত্বে অমুকের বৌ। তার নিজের পরিচয় বলতে শুধু এইটুকুই। শেক্সপীয়রের ‘ওথেলো’ আলাদা। সমীর দাশগুপ্ত-র ‘তৃতীয় একজন’ আলাদা। কিন্তু ‘তৃতীয় একজন’- এক দ্বন্দ্বের উত্তরণ। এটা ভালো লাগে। অবিশ্বাসের নয় বিশ্বাসের জয়, যা নাটকের বলিষ্ঠ অংশ। কিন্তু! কিন্তু যে অভিনেতা/নির্দেশক অনন্ত হিরা’র সুনাম আছে ভারতে, এখানকার আনাচে কানাচেও নাট্যপ্রশিক্ষক হিসেবে যার সুনাম শোনা যায়, তিনি কেনো এতো দুর্বল অভিনয় করে চলে গেলেন ঐদিন! অনন্ত হিরা অভিনীত সামির চরিত্রটি এতো আরোপিত কেনো? নাট্যমেলায় নাটকটি যেদিন মঞ্চস্থ হয়, সেদিন দর্শকের কাছে তুলনা টানবার রসদ ছিল এমনিতেই প্রচুর। কারণ, একই মঞ্চে আগের দুদিন মঞ্চস্থ হয়েছে ‘অথৈ’ এবং ‘ওথেলো’। যা দর্শক মনে আলোড়ন তুলেছে এ বছরের নাট্যমেলায়। অথচ নাটক হিসেবে উনিশ-বিশ আলাদা বিষয়ের আর আলাদা আঙ্গিকটুকু বাদ দিলে আলোচিত ‘তৃতীয় একজন’ নাটকেই উপাদান ছিল বেশি। একান্ত আলাপে অনন্ত বাবু নাট্যপ্রসঙ্গে বলেছেন- সময়ের ক্রাইসিস নিয়ে কলকাতার সঙ্গে তাঁদের কোনো অমিল নেই। আর অমিল নেই বলে মানব মনের অন্ধকার দিকে আলো জ্বালাবার প্রয়াসেই তাঁর এই প্রযোজনা। কিন্তু হঠাৎ হঠাৎ রবীন্দ্রসংগীত, অকারণ ‘ওথেলো’ আওড়ানো নাটকটিকে দুর্বল করেছে মনে হয়। স্বামী-স্ত্রীর মানসিক দ্বন্দ্বে কেনো মনে হলো ‘আরো এক বিপন্ন বিস্ময় আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভিতরে খেলা করে?’ সেটা কি সামিরের কাছে আদৌ পরিষ্কার? অনেক অনেক কিছু বাকি থেকে গেলো। যা বলা হলো তা শুধুই আবরণটুকু। সেটা খসে পড়লে আরো ভালো লাগতো। তাই নাটক শেষে প্রেক্ষাগৃহ ছাড়তে ছাড়তে মনের মধ্যে বিবেকের কাছে গার্হস্থ মানুষ হিসেবে দ্বন্দ্বহীন থাকার বাসনা নিয়ে ঘরে ফেরাটুকুই এই নাটকের পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনা।

১৬ তারিখ সঞ্চয়ন ঘোষের মঞ্চসজ্জা সঙ্গে নিয়ে রবীন্দ্রসদনে বিভাস চক্রবর্তী ‘নটী কিরণশশী’র নাট্যমেলায় প্রবেশে দর্শক আনন্দ লাভ করে। বিভাস চত্রবর্তীর মতো একজন প্রাজ্ঞ যখন এই ধরনের নাটক তার ঝুলি থেকে বের করেন তখন বেড়ালকে রুমাল লাগে বৈ কি!

বছর দুই আগে ঢাকার বইমেলায় একদল ধর্মান্ধ নৃশংসভাবে খুন করে ব্লগার অভিজিৎকে। সেই স্মৃতি বিশ্বময় এখনো টাটকা। অথচ এক সময় এই সমস্ত সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ আজ ইতিহাস। সেই বাংলাদেশ, আর শুধু বাংলাদেশই বলবো কেনো, সারা পৃথিবী জুড়ে যে সাম্প্রদায়িক শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে তার বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করবার একমাত্র অস্ত্র ‘কলম’। বাকার বকুল রচিত ‘ঊর্ণাজাল’ তার জ্বলন্ত উদাহরণ। খালেদ চরিত্র কী দারুণ তৈরি করেছেন। ‘একজন মুরতাদের চোখ দিয়ে তুমি কোরান পড়তে পারো না। একজন মুরতাদের চোখ দিয়ে পৃথিবীর আলো তুমি দেখতে পারো না। সুতরাং এই চোখ তোমাকে বিনষ্ট করতে হবে।’ গা কাঁটা দিয়ে ওঠে। নাটকের দৃশ্যের পর দৃশ্য চোখের সামনে দেখতে দেখতে আমিরের মুখে এই সংলাপ শুনে শরীরটাকে টানটান করে নিয়ে খালেদের প্রতি সিমপ্যাথির পরিবর্তে ঘৃণা ছুঁড়ে দিয়ে দর্শক যেনো বলে ওঠে- ‘দ্যাখ কেমন লাগে’। এখানেই নাট্যকারের ক্যারিশমা দর্শক টের পান। আর তাকে উপযুক্ত সংগত দেন অভিনেতা অভিজিৎ সেনগুপ্ত। যিনি এই নাটকের সহাকারী নির্দেশকও। কত শত সয়ফুল খালেদের মতো শয়তানের ফাঁদে পা দিয়ে আজ দুনিয়াকে নরক করবার চেষ্টায় উঠে-পড়ে লেগেছে। ফয়েজ জহির নির্দেশিত ‘নান্দীমুখ’এর ‘ঊর্ণাজাল’ প্রযোজনা যেনো সেই কথাই বলে গেলো ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায়। বাংলাদেশের ‘নান্দীমুখ’ তার সামাজিক দায়িত্ব দেখিয়েছে। গান এই নাটকে বাড়তি পাওয়া। প্রায় সব অভিনেতাই গানটা কমবেশি ভালোই করেন মনে হলো। মঞ্চের দখল হয়তো অনেক অভিনেতাই ঠিক-ঠিক নিতে পারেননি। দৃশ্যান্তর অনুযায়ী হয়তো পোশাক বা মঞ্চের পরিবর্তন হয়নি। আলোর ঝলকানি না থাকলেও নাটকের টেক্সটে বুঁদ হয়ে প্রেক্ষাগৃহের নিঃশব্দ আবহে এই সাহসী প্রযোজনা উপভোগের সাথে উপলব্ধি করেন মিথ্যা ধর্মের দোহাই দিয়ে নিরীহ মানুষ হত্যা করা ছাড়া অন্য কোনো গঠনমূলক কাজই করতে পারে না ধর্মান্ধরা। ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু সমাজে অন্ধকার সারণি দিয়ে শিরদাঁড়াহীন হেঁটে যেতে যেতে নাট্যাঙ্গনে ‘নান্দীমুখ’ তোমার এ গর্জন আলোর দিশারী নিঃসন্দেহে। তোমাকে সেলাম।

আর প্রায় ৪৪ বছর আগে বিজয় তেণ্ডুলকার লিখেছিলেন যে নাটক সেই ‘ঘাসিরাম কোতোয়াল’ নাটকটি ১৮ তারিখ সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হলো বহরমপুরে। ‘চেতনা’ প্রায় এক বছর আগে নাটকটি নির্মাণ করে। একদল তরুণ-তরুণী মঞ্চে নাচ গান সহযোগে যে নাটক মঞ্চস্থ করলো তা মূল নাটককে ছুঁতে পারলো কৈ! দেবজ্যোতি মিশ্রের মিউজিক, কিংবা সুদর্শন চক্রবর্তীর কোরিওগ্রাফ নাটককে জমিয়ে রাখলেও টেক্সট বুঝতে পারাটাই দর্শকের কামনা।

রইলো বাকি ঊনিশ। প্রসঙ্গত এই ঊনিশ তারিখ ছিল ‘ঋত্বিক’র এ বছরের নাট্যমেলার সমাপ্তি সন্ধ্যা। মঞ্চস্থ হলো সৈয়দ শামসুল হকের কাব্যনাটক ‘নারীগণ’। পালাকার (বাংলাদেশ) প্রযোজিত আতাউর রহমান নির্দেশিত আড়াইশো বছর আগের ঘটনা একুশ শতকে মঞ্চস্থ হলেও তা আজও প্রাসঙ্গিক। আগেই বলেছি সভ্যতার ঊষালগ্ন থেকে নারী তার অধিকার রক্ষায় আজও আন্দোলনরত। পরিস্থিতির কিছুটা পরিবর্তন হলেও সম্পূর্ণ পরিবর্তন এখনো সুদূর ভবিষ্যৎ। যুদ্ধের সাথে নারীকে পণ্য ও পর্ণ-রূপে ব্যবহারের চিরায়ত ইতিহাসের প্রতিস্থাপনই যে ‘নারীগণ’ নাটকের মূল উপজীব্য তা নাট্যকার সৈয়দ হক সাহেব নিজেই বলেছেন। ১৭৫৭ সালের ৩ জুলাই সিরাজউদ্দৌলাকে খুনের সাথে সাথে তাঁর রাজপ্রাসাদের অন্তঃপুরে মহিলাদের বন্দি করে ষড়যন্ত্রকারীরা যে অত্যাচার করেছিল ‘নারীগণ’ নাটকের প্রতি পড়তে পড়তে সেই অদেখা যন্ত্রণার ছবি দেখতে থাকেন উপস্থিত দর্শক বন্ধুরা। আর তারই সাথে নাট্যকার আমাদের দেখিয়ে দেন সমাজের উচ্চ-নিচের বর্ণভেদ। আপাতদৃষ্টিতে অভিনেত্রীদের অভিনয় মাঝেমধ্যে অকারণ উচ্চগ্রামে উঠলেও তাঁদের চরিত্র চিত্রায়ণের চেষ্টা সফলতারই লক্ষণ। সবাই সফল না হলেও কখনো মিউজিক, কখনো আলো তাদের অনেক দুর্বলতা ঢেকে দেয়। হয়তো আরেকটু সম্পাদিত হলে, আরো একটু ভালোর আশা করাই যায়। পেশাদার থেয়েটারের স্বপ্নের পালাকারের কাছে বাড়তি এইটুকু প্রত্যাশা করাই যায়।

প্রসঙ্গত এই বছর গৌতম রায়চৌধুরী স্মৃতি সম্মান প্রদান করা হয় নাট্যব্যক্তিত্ব অরুণ মুখোপাধ্যায়কে, নাট্যপত্রিকা ‘ইলোরা’কে এবং নাট্যদল ‘ইউনিটে মালঞ্চ’কে। দৈনিক বুলেটিন ছিল নবীন-প্রবীণ নাট্যসমালোচক দর্শকদের বাড়তি পাওনা। এ বছরের মতো নাট্যমেলা শেষ হলেও শুরু হয়ে যায় আগামীর প্রস্তুতি- শেষের দিন থেকেই। মনে থেকে যায় আদর-আপ্যায়ন। ছোটবেলায় পড়া একটা গল্পের কথা মনে পড়ে যায়। গাছের ডাল অন্ধকার থেকে আলোর দিকে এগিয়ে যায়। এই এগারো দিনে নাট্যপরিচালকেরা আমাদের তাঁদের বিবিধ প্রয়োগকৌশলে যেন সেই শিক্ষাই দিয়ে গেলেন। নাটকে যদি লোকশিক্ষা হয় তবে সত্যের জয় হোক। তবু মনে হয় এখনো অনেক পথ বাকি। বন্ধু হে, হে সুজন- `আয় আরো হাতে হাত রেখে/আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’।

বিদ্যুৎ মৈত্র: সাংবাদিক ও শিক্ষক। বহরমপুর, ভারত