গত ২০ বছরে আমাদের থিয়েটার : ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে
স ম্পা দ কী য়
এস এম সোলায়মান মাথা নিচু করে ঢুলুঢুলু বিড়বিড় করছে আর ভাবছে, নাট্যোৎসব করার পরিকল্পনা হাতে নেয়ার সাথে সাথে তা সফল করার জন্য সবাই কেমন ‘উন্মাদ’ হয়ে উঠেছে। সে যেন বলছে- থিয়েটার করতে এমন ক্ষ্যাপামীই তো চাই। আবার এ-ও ভাবছে, গত ২০ বছরে অনেকেই পৃথিবী ছাড়লো ঠিকই, কিন্তু থিয়েটার ছাড়তে পারলো কৈ? সত্যিই- ‘ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে।’
সে বসে আছে বজরা টাইপের একটা নৌকার সামনের গলুইয়ের একেবারে শীর্ষবিন্দুতে। এটা ইহজাগতিক বজরা নৌকার চেয়ে অনেক বড় সাইজের। তিন/চার না যেন পাঁচ/ছয় তলা। লম্বায়ও উচ্চতা-অনুপাতে দীর্ঘ। গত ২০ বছরে আমাদের যত নাট্যজন গত হয়েছে, সবাই গিয়ে উঠেছে এই বজরায়। যেন বোঝাতে চায়, থিয়েটারের মানুষকে একজোট হয়ে থাকতে হয়- কী একালে, কী সেকালে। বজরার ছাদে চেয়ার-টেবিল সাজিয়ে নাটক লিখছিল আবদুল্লাহ আল-মামুন। লেখার এক ফাঁকে, যখন পরের সংলাপটা কী হবে বা চরিত্রটা ঠিকঠাক আকার পাচ্ছে কিনা, এমন ভাবনা নিয়ে এদিক ওদিক আনমনে তাকাচ্ছিল, তখন দেখলো সোলায়মান গলুইতে বসে ঝিমাচ্ছে আর বিড়বিড় করছে। সে উচ্চস্বরে ডাকে-
ঐ সোলায়মান, গলুইয়ের অত উঁচুতে কেউ বসে নাকি? পড়ে যাবে তো।
পড়ে গেলে ক্ষতি কী? মরবো তো না। ঐ কাজ তো সেরেই এখানে এসেছি- হি হি।